সুনামগঞ্জ , রবিবার, ২২ জুন ২০২৫ , ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কৃষিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত হাওরের মাছ : মৎস্য উপদেষ্টা টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে পর্যটকদের মানতে হবে ১৩ নির্দেশনা শহরের লঞ্চঘাটে সিঁড়ি নির্মাণকাজে অনিয়ম দাবি একটাই - জেলা সদরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস চাই তাহিরপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, বসতবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ঝুঁকিতে হাওরের জীববৈচিত্র্য, দায় কার? তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে প্রস্তুতি চলছে : আমীর খসরু ডেসটিনেশন ট্রাভেল এজেন্সির উদ্বোধন ছাতকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ৩ ৪৬ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মিলছে না কাঙ্খিত সেবা ১১ লাখ টাকার ভারতীয় অবৈধ পণ্য জব্দ দোয়ারাবাজারে গৃহবধূ রোকসানা হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে সেনাবাহিনী সবচেয়ে বেশি ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ প্রতিষ্ঠান বিআরটিএ প্রাথমিক শিক্ষকদের ফেসবুক ব্যবহারের ওপর কঠোর নজরদারি মাদকাসক্ত ছেলেকে হত্যা করেন বাবা, সহযোগিতা করেন মা বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উদযাপন হাওরের সম্পদ সৌন্দর্যে মরণকামড়, শূন্য হচ্ছে বিরল ভান্ডার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে হট্টগোল পুকুরে বিষ প্রয়োগে ২০ লক্ষ টাকার মাছ নিধন, থানায় মামলা দায়ের

সোনা চোরাকারবারিদের ঘন ঘন বিদেশযাত্রা ঠেকানোর উদ্যোগ

  • আপলোড সময় : ১৪-১০-২০২৪ ০৯:২৬:৩৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-১০-২০২৪ ০৯:২৬:৩৭ পূর্বাহ্ন
সোনা চোরাকারবারিদের ঘন ঘন বিদেশযাত্রা ঠেকানোর উদ্যোগ
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট দেশের এই তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে নিয়মিত সোনা আনছে চোরাকারবারিরা। এজন্য তারা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার করে থাকে। আবার চোরাকারবারিরা তাদের ব্যবসার কাজে ঘন ঘন বিদেশ যাওয়া-আসাও করে। দেশে সোনা আনার পর আবার অন্য দেশে তা পাচারও করে দেয়। এ সবকিছুর মাধ্যমে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশ। তাই আপাতত সোনা কারবারিদের ঘন ঘন বিদেশ যাওয়া ঠেকানোর উদ্যোগ নিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এজন্য তারা একটি সফওয়্যার সিস্টেম ডেভেলপ করেছে। কাস্টমসের সূত্র বলছে, নতুন সিস্টেমে সোনা চোরাচালান ও বিদেশে অর্থপাচার ঠেকানো সম্ভব হবে। কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত বছর ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি দিয়েছিল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ওই চিঠিতে বলা হয়- বিদেশ থেকে আসার সময় শুল্ক ফাঁকি, নিষিদ্ধ ও নিয়ন্ত্রিত পণ্য পরিবহনসহ চোরাচালানের দায়ে কিছু ব্যক্তি কাস্টমসের কাছে ধরা পড়েছে। তাদের মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এসব যাত্রীর মাধ্যমে অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বহন ও পাচারের ঝুঁকি রয়েছে। এমতাবস্থায় ওই সব যাত্রীর বিদেশ ভ্রমণের সময় বিমানবন্দর কাস্টমসকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো। একইসঙ্গে যাত্রীরা বছরে কতবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন, তা জানানোর জন্যও অনুরোধ করা হলো। সূত্র জানায়, এভাবে চিঠি চালাচালি করে তথ্য পেতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। পদ্ধতিটাও খুব একটা কার্যকর নয়। এ কারণে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চিঠি চালাচালির বদলে নিজেরাই একটি সিস্টেম ডেভেলপড করেছে। ‘ডিআর পাসপোর্ট সিম্পল’ নামে এই সফটওয়্যার সিস্টেমটি একজন যাত্রীর পাসপোর্ট স্ক্যান করার পর তার সব তথ্য ভান্ডারে নিয়ে নেবে এবং তা সংরক্ষিত থাকবে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো- যাত্রীবেশি চোরাকারবারিদের ঘন ঘন বিদেশ যাওয়া, সোনা ও টাকা পাচার বন্ধ করা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষের যুগ্ম কমিশনার আলামিন হোসেন বলেন, আমাদের এই সিস্টেমের সঙ্গে সোনালী ব্যাংক ‘ব্যাগেজ ট্যাক্স’ নামে আরেকটি সফটওয়্যার ডেভেলপ করেছে। অবশ্য আমরা জনতা ও রূপালি ব্যাংকেও বলেছিলাম। তিনি বলেন, প্রথমে একজন যাত্রী স্বর্ণ বা অন্যান্য শুল্কায়িত পণ্য ঘোষণা করলে আমরা তার পাসপোর্টটি স্ক্যান করবো। এভাবে আমাদের কাছে তার সব তথ্য থাকবে। এরপর তিনি সোনালী ব্যাংকে যাবেন। সেখানে ‘ব্যাগেজ ট্যাক্স’ নামে যে সফটওয়্যারটি আছে, সেটি ব্যবহার করে ট্যাক্স দেওয়া নিশ্চিত করলে আমরা তাকে ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ দেবো। কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার আলামিন হোসেন জানান, এখানে দুটি বিষয় আছে। প্রথমত, প্রবাসীরা আসলে তারা যেন কোনোভাবে হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়টি নজরে রেখে আমরা কাজ করবো। এরই মধ্যে দুটি গ্রিন চ্যানেলে অতিরিক্ত আরও দুটি স্ক্যানার বসিয়েছি। যাতে করে একদিকে যাত্রীসেবা সুরক্ষা হয়, অপরদিকে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে যেন কেউ বাইরে যেতে না পারে। আর দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, একজন যাত্রী বিদেশ থেকে যতটুকু সোনা আনতে পারবেন, শুল্ক দিয়ে তিনি সেটা নিয়ে যাবেন। কিন্তু কোনও যাত্রী ঘন ঘন সোনা আনলে, আমাদের ভা-ারে তার তো তথ্য থাকছে। সেক্ষেত্রে তাকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। এমনকি আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাস্টমস সূত্র জানায়, দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে এক শ্রেণির যাত্রী ঘন ঘন বিদেশ যাচ্ছেন। তারা মূলত মালয়েশিয়া, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়ে থাকেন। এদের কাজই হলো স্বর্ণসহ নানা ধরনের পণ্য নিয়ে আসা। দেখা যায়, এই যাত্রীরা দেশে এসে কাস্টম ট্যাক্স ও ভ্যাটও পরিশোধ করেন। কিন্তু এরা যেসব পণ্য নিয়ে আসেন, সেগুলো কেনার জন্য যে টাকার প্রয়োজন হয়- সেই টাকা তারা হুন্ডির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশেগুলোতে পাঠান। অর্থাৎ ব্যাংকিং চ্যানেলে এদের কোনও লেনদেন নেই। এরাই মূলত যাত্রীবেশি চোরাকারবারি। এদের চিহ্নিত করার জন্যই মূলত নতুন সফটওয়্যার ডেভেলপড করে নতুন সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। সূত্রের দাবি, দেশে বৈধভাবে যে পরিমাণ সোনা আসে, সেগুলো দেশে থাকে না। বেশিরভাগ দেশের বাইরে চলে যায়। এক্ষেত্রে দেশ থেকে যেমন টাকা চলে যাচ্ছে, আবার সোনাও চলে যাচ্ছে। দুই দিক থেকেই দেশের ক্ষতি হচ্ছে। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, এসব যাত্রী জেনেশুনেই বৈধভাবে যে পরিমাণ সোনা আনা যায়, তার চেয়েও কিছু বেশি নিয়ে আসে। তখন সোনাগুলো জব্দ করার পর বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। পরে তারা বিচার শাখা থেকে ট্যাক্স, ভ্যাট ও জরিমানা দিয়ে সোনা ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সরকার শুধু ট্যাক্স, ভ্যাট ও জরিমানার টাকা পায়। কিন্তু চোরাকারবারিরা পরে ওই সোনা দেশের বাইরে পাচার করে দেয়। ঢাকা কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার (চোরাচালান প্রতিরোধ) ইফতেখার হোসেন বলেন, আমরা টাকাপাচার ও চোরাচালান রোধে কঠোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। একইসঙ্গে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আমরা অনুসন্ধান করে দেখেছি, একজন যাত্রী সপ্তাহে দুই বার করে দুবাই যান। আসার সময় ১১০ গ্রাম করে গোল্ডবার ও অলংকার নিয়ে আসেন। এরপর কাস্টমস হলে ঘোষণা দিয়ে ওই গোল্ডবারের ট্যাক্স ও ভ্যাট দেন। অথচ এসব গোল্ডবার কেনার টাকা তিনি কীভাবে বিদেশে পাঠিয়েছেন, জিজ্ঞেস করলে তিনি স্বীকার করেছেন যে টাকাটা হুন্ডির মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। এই উপ-কমিশনার বলেন, এর অর্থই হলো টাকাটা পাচার হয়ে গেছে। পাশাপাশি তিনি যে গোল্ডবার নিয়ে এসেছেন সেটিও পাচার হয়ে যাচ্ছে। তাহলে দুই দিক থেকেই দেশের ক্ষতি। আবার অনেক সময় কাস্টমের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাইরে চলে গেলে কিছুই ধরা পড়ে না। এটি আমলে নিয়ে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে বৈঠকের মাধ্যমে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইফতেখার হোসেন বলেন, এখন থেকে যেসব যাত্রীকে এভাবে পাওয়া যাবে, তারা যেন কোনোভাবেই দেশের বাইরে যেতে না পারেন, সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে প্রতিদিন অন্তত ২০ কেজি সোনা বৈধভাবেই দেশে আসছে। এই ২০ কেজি সোনা কেনার টাকাটা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ যাচ্ছে। তাহলে দেশ থেকে প্রতিদিন কী পরিমাণ টাকা পাচার হচ্ছে সেটি সহজেই অনুমান করা যায়। আবার দেশে আসা স্বর্ণগুলো পাশের দেশে পাচার হয়ে যাওয়ার কারণে মূলত দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নতুন সিস্টেম চালু হলে অবৈধভাবে সোনা নিয়ে আসা ও পাচার রোধ করা যাবে বলে আমরা আশা করছি। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রধান ও বিশ্লেষক ড. কুদরাত ই খুদা বাবু বলেন, কাস্টমের এ সিদ্ধান্তের ফলে চোরাচালান ও টাকা পাচার কমে আসবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
সুইস ব্যাংকে টাকাগুলো কাদের, কীভাবে জমা হয়েছে : মির্জা ফখরুল

সুইস ব্যাংকে টাকাগুলো কাদের, কীভাবে জমা হয়েছে : মির্জা ফখরুল